গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ‘ছিনতাইয়ের চেষ্টা’ করার সময় কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পলাশ আহমেদ নামের এক যুবক। সেই প্রেক্ষাপটে নিহতের সাবেক স্ত্রী ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী শামসুন নাহার সিমলাকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় বন্দরনগরীর দামপাড়া এলাকায় ইউনিটের কার্যালয়ে এই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
আমাদের চট্টগ্রাম সংবাদদাতা জানান, সিমলা সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি গত ২৫ আগস্ট ভারতের মুম্বাই থেকে ঢাকায় আসেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাকে চট্টগ্রামে এসে বক্তব্য দেওয়ার কথা জানান।
কী কী বিষয় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে?- এমন প্রশ্নের জবাবে সিমলা বলেন, পুলিশ মূলত পলাশের সঙ্গে তার পরিচয় ও বিয়ে সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তিনি আরো জানান, বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনার আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাই তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানেন না। কেননা, বিচ্ছেদের পর থেকে পলাশের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিলো না বলেও জানান তিনি।
পলাশ মানসিকভাবে ‘ডিসটার্বড’ ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন সিমলা। বলেন, তার কিছু কিছু আচরণের কারণে তিনি বিরক্ত ছিলেন বলেই তাকে আর ভালো লাগেনি। সে কারণেই তিনি পলাশকে তালাক দিয়ে দেন।
‘ম্যাডাম ফুলি’ অভিনেত্রী পুলিশকে পলাশের সঙ্গে তার বিয়ে ও বিচ্ছেদের বিষয় এবং এর মাঝের কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পলাশের সঙ্গে গুলশানের এক কফিশপে এক পরিচালকের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তার পরিচয় হয়।
তিনি নিজেই পলাশকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, এরপর তাদের বিয়ে হয় ২০১৮ সালের ৬ মার্চ এবং বিচ্ছেদ হয় সে বছরের ৫ নভেম্বর।
জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, বিমান ছিনতাইচেষ্টায় যিনি নিহত হয়েছেন সেই পলাশ আহমেদের সঙ্গে সিমলার কীভাবে পরিচয় ও বিয়ে হয়েছে সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, প্রসঙ্গত অন্যান্য বিষয় নিয়েও সিমলার সঙ্গে কথা হয়েছে। বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্যে তার তাকে ডাকা হয়েছে।
সিমলা পুলিশকে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন উল্লেখ করে রাজেশ বড়ুয়া আরো জানান, সিমলার দেওয়া তথ্যের সঙ্গে পুলিশের হাতে আসা পলাশ সম্পর্কে কিছু তথ্যের মিল পাওয়া গেছে। আজকে সিমলার দেওয়া আরো কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে।
সিমলাসহ মোট ৪২ জনের সাক্ষ্য-প্রমাণ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সিমলাকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ‘ছিনতাইয়ের চেষ্টা’ করার সময় কমান্ডো অভিযানে পলাশ আহমেদ নিহত হন।