জলবায়ু পরিবর্তন, বিশেষ করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর বহু জায়গাই খরা, বন্যা ও ফসলহানির কবলে পড়ছে ও আরও পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে কানাডার জন্য তা মঙ্গল বয়ে আনবে বলেই ধারণা করছেন অনেকে।
কানাডার বিজ্ঞানী, কৃষক ও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে দেশটিতে লাখ লাখ একর জমি চাষোপযোগী হবে। বর্তমানে এসব জমি বরফে ঢাকা।
দুই লাখ কৃষকের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন কানাডিয়ান ফেডারেশন অব এগ্রিকালচারের প্রেসিডেন্ট রড বনেট বলেন, ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উত্তর অক্ষাংশের যে গুটি কয়েক দেশে সুযোগ সৃষ্টি হবে, তার মধ্যে কানাডা একটি।
কানাডার রাষ্ট্রীয় কৃষি ও কৃষিজ খাবার সংস্থার কর্মকর্তা ইয়ান জার্ভিস বলেছেন, মোট আয়তনের দিক থেকে কানাডা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দেশের কতটা জমি ফসল উৎপাদনের উপযোগী হবে, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে ২০৪০ সালের মধ্যে কানাডার তিন অঙ্গরাজ্যেই কৃষিজ জমি ২৬ থেকে ৪০ শতাংশ পরিমাণে বাড়বে বলে মনে করছেন জার্ভিস।
উল্লেখ্য, উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় দেশ কানাডার ১০টি অঙ্গরাজ্য এবং তিনটি অঞ্চল রয়েছে। মোট আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হলেও ভূমির হিসেবে কানাডা চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। আর এর উত্তর দিকে রয়েছে আর্কটিক মহাসাগর। দেশটির অধিকাংশ এলাকা শীতল থেকে শীতলতর হলেও দক্ষিণাংশ গ্রীষ্মকালে গরম থাকে।
সরকারি হিসাবমতে, কানাডা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাল রপ্তানিকারক দেশ। সেই সঙ্গে গম উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোরও একটি কানাডা। কৃষকেরা আশা করছেন, সাড়ে তিন কোটি অধিবাসীর এই দেশটি অপেক্ষাকৃত উষ্ণ তাপমাত্রার কারণে উপকৃতই হবে। শুধু ফসল উৎপাদনেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কঠিন খাদ্য সমস্যায় পড়া দেশগুলোয় রপ্তানিও বাড়বে কানাডার।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার (এফএও) তথ্যমতে, বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে ২০৫০ সালের মধ্যে কৃষি উৎপাদন ৫০ শতাংশ বাড়াতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দক্ষিণাঞ্চলে ফসলহানির হার বাড়ছে।