স্টাফ রিপোর্টার
প্রথম পাতা ১৫ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার
প্রভাবশালীদের চাপে পড়ে ফারদিন ইফতেখার দিহানের তিন বন্ধুকে আড়াল করার অভিযোগ করেছে নিহত স্কুল শিক্ষার্থী আনুশকার পরিবার। এমন অভিযোগ আনুশকার সহপাঠীদেরও। ধর্ষণের পর আনুশকার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এই তিনজনকে আসামি করা হয়নি। ঘটনার বিষয়ে তথ্য জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আনুশকার পরিবার বার বার প্রশ্ন তুললেও তদন্ত সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- প্রয়োজনে ওই তিনজনকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ফারদিন ইফতেখার দিহানের সঙ্গে থাকা হুমায়েদ মিল্কি, অলভি মাহবুব এবং তাদের আরেক বন্ধুকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে থাকা ফারদিনের আরেক বন্ধুর বিস্তারিত নাম পরিচয় জানা যায়নি। গত বুধবার একটি ইংরেজি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে দিহানের সহযোগী হিসেবে হুমায়েদ মিল্কি, অলভি মাহবুব এবং মি. এক্স বলে উল্লেখ করা হয়।
দিহানের তৃতীয় এই বন্ধুটিকে নিয়েই রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফারদিনের তিন বন্ধুর মধ্যে দু’জনের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক ভালো। তাদের মধ্যে একজন একটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয়। তারা দু’জন সম্পর্কে চাচাতো ভাই। ফারদিনের আরেক বন্ধু মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তাদের দু’জনের বাসা ধানমন্ডি এলাকায় এবং আরেকজনের বাসা কলাবাগান থানাধীন ভূতের গলি এলাকায়। গ্রেপ্তারের পর দিহান জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ঘটনার দিন ফারদিন প্রথমে তার এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে জানায়, সে অসুস্থ দ্রুত হাসপাতালে আসতে হবে। পরবর্তীতে ওই বন্ধু তার অন্য দুই বন্ধুকে ফোন দিয়ে হাসপাতালে ডেকে আনে। তারা মূলত কেউ সরাসরি বন্ধু নয়। এক বন্ধুকে দিয়ে আরেক বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে তাদের।
সূত্র জানায়, দিহান এর আগেও একাধিক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে। দিহান মূলত তার বাবার প্রভাব প্রতিপত্তি, দামি গাড়ি এবং উপহার সামগ্রী দিয়ে মেয়েদের প্রভাবিত করতো। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দিহান এবং তার বন্ধুরাসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী মিলে একত্রে একেক জনকে মারধর করা, স্কুলের বাইরে গিয়ে বিভিন্নজনকে হুমকি দেয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের ‘ও’ লেভেল’ শেষ হয়েছে গত বছরের আগস্ট মাসে। বর্তমানে তারা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত নেই।
রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঘটনার দিন হাসপাতালে দিহানের সঙ্গে থাকা তিন বন্ধু যেহেতু আসামি নয় তাই তাদের বিস্তারিত নাম-পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে সংগ্রহ করা হয়নি। তারা আমাদের দৃষ্টিতে অপরাধী প্রমাণিত হয়নি। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত কিনা সেটা খুঁজে বের করা আমাদের দায়িত্ব। তারা দিহানের বন্ধু এটাই তাদের প্রথম পরিচয়। এর বাইরে আমরা ওভাবে তথ্য সংগ্রহ করিনি। তারা চারজনই শিক্ষার্থী। তবে এর বেশি বিস্তারিত কিছু বলার সুযোগ নেই।