সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং দেশজুড়ে নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভারতে সহিংস প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে স্ববিরোধী ও বিপরীতমুখী কথা বলছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
গতকাল (২৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীই (নরেন্দ্র মোদি) সঠিক বলেছেন। দেশজুড়ে এনআরসি করার বিষয়ে এখনই কোনও আলোচনা হবে না।”
প্রধানমন্ত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এনআরসি নিয়ে মন্ত্রীসভায় কোনো আলোচনা হয়নি।” তিনি প্রধানমন্ত্রীর মতোই দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে বলেছেন যে তাদের কোনো ভয় নেই। তবে তিনি জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জি (এনপিআর) নামে নতুন প্রকল্পের পক্ষে কথা বলেছেন।
ভারতজুড়ে বিতর্কিত সিএএ এবং এনসিআরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে গিয়ে অন্তত ২৪ জন নিহত হওয়ার পর দিল্লিতে এক নির্বাচনী জনসভায় নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, “দেশজুড়ে এনআরসি করার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।” এরপরই, সৃষ্টি হয় নতুন বিতর্ক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন- ‘এনআরসি হবে’ আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি’। তখন প্রশ্ন উঠে, তাহলে কে সঠিক?
সেই বিতর্ককে সামাল দিতেই হয়তো অমিত শাহ এমন মন্তব্য করেছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কেননা, তাকে বিতর্কিত এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি সরব থাকতে দেখা গিয়েছিলো।
সিএএ, এনআরসি বিতর্কের পর এবার জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) বা জনসংখ্যপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নতুনভাবে কাজ শুরু করছে। আর তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তারা বলছে, এনপিআর হচ্ছে এনআরসির প্রাথমিক ধাপ। গণ-বিক্ষোভে পড়ে সরকার ঘুর পথে এনপিআরের মাধ্যমে এনআরসি করতে যাচ্ছে। সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অমিত শাহ বলেন, “এনআরসি এবং এনপিআরের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধার জন্য জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জি (এনপিআর) তৈরি করা হবে। তার মতে, “যারা এর বিরোধিতা করছেন, তারা গরিব মানুষের ক্ষতি করছেন।”
পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালা রাজ্যে এনপিআরের কাজ বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেছেন, “আমি কথা বলবো এবং তাদের কাছে আবেদন করবো, এটি নিয়ে যেনো কোনও রাজনীতি না করা হয়।”