দীন ইসলাম
পঙ্গুত্বের পথে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। হাত-পা নড়াতে পারছেন না। চলছেন হুইল চেয়ারে। কথা বলতে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর গলা কাঁপছে। পছন্দসই ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। পছন্দের চিকিৎসক সেবা নেয়ার দাবি ধোপে টিকছে না। অন্যদিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্টে খালেদা জিয়ার মামলা শুনানী নিয়ে সময়ক্ষেপন করেই চলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ডকুড্রামা করছে বাংলাদেশ সরকার। খালেদাকে নিয়ে মনগড়া কথা বলে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা। খালেদার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিএসএমএমইউ’র মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে লুকোচুরি খেলা খেলছে। বিএনপি’র শীর্ষ নেতা ও ড্যাব নেতারা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। সাহায্য ছাড়া চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়া করতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর। শরীরের তীব্র ব্যথার কারনে ঘুমাতে পারছেন না। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগজনিত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যে কোন সময় তিনি স্থায়ী পঙ্গত্ববরণ করতে পারেন। সরকারের বিভিন্ন মহল বিএনপি’র পক্ষ থেকে করা এসব বক্তব্য হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এক বৈঠকে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে আদালতের রায়ে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে তিনি রাজার হালেই রয়েছেন। পৃথিবীর কোন ইতিহাস নেই যে, আদালত কর্তৃক কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামির সেবা করার জন্য একজন কাজের বুয়া দেয়া হয়। আমরা তা দিয়েছি, কারণ আমাদের কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নেই। ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের পর নাটক যেন আরও জমে উঠে। বিএসএমএমইউ’র মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি করতে গড়িমসি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ৫ ডিসেম্বর আপীল বিভাগের শুনানীর দিনে মেডিক্যাল রিপোর্ট পৌছেনি। এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম মেডিক্যাল রিপোর্ট সুপ্রীম কোর্টে জমা না দিয়ে শুনানীর জন্য সময় প্রার্থনা করেন। প্রধান বিচারপতি মাহবুব হোসেনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করেন। এরপরই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বোর্ডের সামনে গন্ডগোল বেধে যায়। বিএনপিপন্থী আইনজীবিরা ‘ওই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে শ্লোগান দেন। তারা প্রধান বিচারপতির চেম্বারে তিন ঘন্টা অবস্থান করেন। এখন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র মধ্যে সুপ্রীম কোর্টে প্রধান বিচারপতির চেম্বারে অবস্থান নিয়ে কথাযুদ্ধ শুরু হয়েছে। এখনও চলছে সেই কথার যুদ্ধ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ক্ষমতাসীন দল ও বিএনপি’র কথার যুদ্ধ হয়তো এক সময় থামবে। কিন্তু ডকুড্রামা থামার লক্ষণ নেই। ১২ ই ডিসেম্বর সরকারি ড্রামার বিষয়টি ফয়সালা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া কোন উপায় আছে কি?