বঙ্গবন্ধুর শেষ মন্ত্রিসভা ছিলো ৩০ সদস্যের। ১৯৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু তার মন্ত্রিসভা পূর্ণ:গঠন করেন। মন্ত্রিসভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন উপ রাষ্ট্রপতি এবং মনসুর আলী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর এই মন্ত্রীসভার প্রায় সব সদস্যই খুনি মোশতাকের সাথে হাত মেলান।
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার যে সদস্যরা সেদিন মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যান নি, তারা হলেন:
১. সৈয়দ নজরুল ইসলাম- উপ রাষ্ট্রপতি ( গ্রেপ্তার হন, ৩ নভেম্বর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়)
২. মনসুর আলী- প্রধানমন্ত্রী (গ্রেপ্তার হন, ৩ নভেম্বর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়)।
৩. এএইচএম কামরুজ্জামান, মন্ত্রী, শিল্প মন্ত্রণালয়, গ্রেপ্তার হন, ৩ নভেম্বর তাকে হত্যা করা হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।
৪. আবদুস সামাদ আজাদ, কৃষি মন্ত্রী, (৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার হন)
৫. ড. কামাল হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, (৭৫ এর ১৫ আগস্টে বিদেশে ছিলেন।)
৬. আবদুর রব সেরনিয়াবাদ, মন্ত্রী, মৎস্য, বন্যা, বিদ্যুৎ শক্তি (৭৫ এর ১৫ আগস্ট হত্যা করে ঘাতকরা)
৭. এম কোরবান আলী, তথ্য ও বেতার (৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার হন।)
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভা থেকে যারা মোশতাকের মন্ত্রীসভায় গিয়েছিলেন:
১. খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর শেষ মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য মন্ত্রী ছিলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর স্বঘোতি রাষ্ট্রপতি হন।
২. মোহাম্মদউল্লাহ, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় উপ রাষ্ট্রপতি হন।
৩. অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী সভায়, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায়, পরিকল্পনা দফতর।
৪. শ্রী ফনী ভূষন মজুমদার, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় এলজিআরডি খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় একই দপ্তরে বহাল।
৫. মো: সোহরাব হোসেন, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় পূর্ত ও গৃহনির্মাণ মন্ত্রী খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় একই পদে বহাল।
৬. আবদুল মান্নান, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় একই দায়িত্বে।
৭. শ্রী মনোরঞ্জন ধর, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল।
৮. আবদুল মোমিন, বঙ্গবন্ধু সরকারের খাদ্য ও পূণ:বাসন মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়
৯. আসাদুজ্জান খান, বঙ্গবন্ধু সরকারে পাট মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় বন্দর ও জাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী।
১০. ড. আজিজুর রহমান মল্লিক, বঙ্গবন্ধুর অর্থমন্ত্রী, খুনি মোশতাকেরও অর্থমন্ত্রী।
১১. ড. মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল।
১২. বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু সরকারের বন্দর ও জাহাজ চলাচল মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
১৩. তাহের উদ্দিন ঠাকুর, বঙ্গবন্ধু সরকারের তথ্য ও বেতার প্রতি মন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল
১৪. কে.এম ওবায়দুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় ডাক, তারও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল।
১৫. নুরুল ইসলাম মঞ্জুর, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রী সভায় স্বপদে বহাল।
১৬. অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল।
১৭. দেওয়ান ফরিদ গাজী, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল
১৮. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় বন ও মৎস্য প্রতিমন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল।
১৯. ডা. ক্ষিতীশ চন্দ্র মন্ডল, বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভায় ত্রাণ ও পূণ:বাসন প্রতিমন্ত্রী খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্বপদে বহাল।
২০. সৈয়দ আলতাফ হোসেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের দপ্তর বিহীন প্রতিমন্ত্রী, খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের তিনজন খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় নতুন সদস্য হয়েছিলেন। এরা হলেন:
১. শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিমন্ত্রী বিমান ও পর্যটন
২. মোসলেম উদ্দিন খান, হাবু মিয়া, প্রতিমন্ত্রী পাট মন্ত্রণালয়
৩. মোমেন উদ্দিন আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী, বন্যা নিয়ন্ত্রণ।