বাসায় ডেকে উচ্চবিত্তদের ব্ল্যাকমেইল করাই ছিল ‘রাতের রানী’ পিয়াসা-মৌয়ের কাজ

উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে বাসায় ডেকে এনে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করাই ছিল ‘রাতের রানী’ বলে সুপরিচিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের কাজ। গতকাল রোববার রাতে বারিধারা ও মোহাম্মদপুরের পৃথক দুটি বাসায় অভিযান চালিয়ে আলোচিত পিয়াসা ও মৌকে আটকের পর এই তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘পিয়াসা ও মৌ একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। ওরা রাতের রানী বলেই সুপরিচিত। সারাদিন ঘুমিয়ে কাটাতেন। রাতে বিভিন্ন পার্টিতে গিয়ে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে বাসায় ডেকে আনতেন। এরপর বাসায় গোপনে তাদের আপত্তিকর ছবি তুলতেন। সেই ছবি বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের দেখানোর ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন।’

পিয়াসা ও মৌয়ের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল করার অনেকগুলো অভিযোগ তদন্ত করছিলেন জানিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘তদন্তের অংশ হিসেবে ফারিয়া ও মৌয়ের বাসায় অভিযান চালানো হয়। তাদের বাসা থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা পাওয়া গেছে।’

ব্ল্যাকমেইলিং করার বিষয়ে ওই দুই মডেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ছাড়া যেহেতু মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে, এজন্য গুলশান ও মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার।

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মৌ ও পিয়াসা তাদের বাসায় মদের আসর বসাতো মূলত উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ব্ল্যাকমেইল করার জন্য। এই বিষয়ে তদন্তে সত্যতা পেলে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগেও পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রোববার রাতে প্রথমে বারিধারার পিয়াসার বাসায় অভিযান চালানো হয়। তার বাসা থেকে মাদকদ্রব্যসহ পিয়াসাকে আটকের পর অভিযান চালানো হয় মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের একটি বাসায়। সেখান থেকে অন্তত এক ডজন বিদেশি মদ, পাঁচ প্যাকেট ইয়াবাসহ মৌকে আটক করা হয়।

সরেজমিনে মৌয়ের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, গনমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ওই বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছিল। মিরপুর রোড সংলগ্ন ২২/৯ বাবর রোডের ওই বাসার নিচতলায় থাকতেন মৌ। বাসার ভেতরে ড্রয়িং রুমের পাশেই একটি মিনি বার দেখা গেছে। বাসার ভেতরের বেডরুমের একটি ড্রয়ার থেকে পাঁচ প্যাকেট ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ওই বেডরুমের ভেতরে আরেকটি ড্রেসিং রুম থেকে অন্তত এক ডজন বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে বাবর রোডের বাসা থেকে আটকের পর মডেল মৌ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ভাসাবির জামানের বউ তাকে বাসায় পুলিশ পাঠিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

মৌ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‌’ভাসাবির জামানের বউ আমার পরিচিত। তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে গিয়ে পিয়াসার সঙ্গেও আমার পরিচয় হয়। ভাসাবির জামানের বউ তানজি’র সঙ্গে ওদের কার যেন ঝামেলা হয়েছে, সেজন্য আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার বাসায় এসব মদ আর ইয়াবা আগে থেকে ছিল না।’

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ