ছাত্রলীগের পিটুনিতে বমি করে দেন শীতল, দেয়া হয়নি পানিও!

বুয়েটের আবরারের মতোই ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক শীতল। প্রাণে বেঁচে গেলেও আসতে পারছেন না ঢাকায়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পুলিশ বলছে, তারা আসামিদের খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফজলে রাব্বী হলে ঢুকতেই দুটি ব্যানার চোখে পড়ে। একটি শাহরিয়ার ও অন্যটি ফুয়াদের। তাদের একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অন্যজন সাধারণ সম্পাদক। নির্যাতনের শিকার এক শিক্ষার্থীর দায়ের করা মামলার আসামিও তারা।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গত ১৪ জানুয়ারি ইন্টার্ন রোটা বণ্টন নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে রুম থেকে পুকুর পাড়ে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়।

নির্যাতনের শিকার ইন্টার্ন চিকিৎসক আলী ইমাম শীতল বলেন, ‘আমাকে মাথায় তিন থেকে চারবার লাথি দিলে আমি বমি করে ফেলি। তারপর ওরা আমাকে দলবেধে টেনে গণরুমে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে রড দিয়ে মারধর করে।’

এক পর্যায়ে সেখান থেকে নেওয়া হয় কমনরুমে। সেখানেও চলে নির্যাতন। যদিও কমনরুমের বাইরে সিসি ক্যামেরা ছিল, কিন্তু ঘটনার পর সেটির তার কেটে ফেলা হয় বলে অভিযোগ নির্যাতিতের।

ভুক্তভোগী শীতল বলেন, ‘আমাকে মাথায় আঘাতের এক পর্যায়ে যখন আমি বমি করছিলাম, তখন আমি পানি চাচ্ছিলাম। তখন আমি বলছি, আমি চোখে অন্ধকার দেখছি, আমাকে একটু পানি দেন। ওই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছিল আমি আর বেঁচে ফিরতে পারব না।’

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়ে চকবাজার থানায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী। কিন্তু পুলিশ বলছে, তারা আসামি খুঁজে পাচ্ছে না।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদুদ হাওলাদার বলেন, ‘আসামিদের এখনও গ্রেফতার করতে পারি নাই। আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা করতেছি। তবে শীতলকে মারার ঘটনা সত্য।’

যদিও মামলার এক নম্বর আসামি শাহরিয়ার সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করে সময় সংবাদকে সব ঘুরে ঘুরে দেখান। তার দাবি, সেদিন শীতলই হামলা করে তার ওপর।

এ ঘটনায় গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু ১০ দিন পরও সেই রিপোর্ট জমা হয়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শহীদ ডা. ফজলে রাব্বী হলের প্রভোস্ট ডা. হাসানুর রহমান বলেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি এর বিচার হবে। এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে যাতে পরবর্তীতে এই ধরণের চিন্তা-ভাবনা আর কেউ না করতে পারে।’

শীতলের রুমে তালা ঝুলছে। তার রুমমেট পারিবারিক সমস্যার দোহাই দিয়ে ভয়ে হলে আসছেন না বলেও জানা গেছে।
উৎসঃ   সময়টিভি

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ