কানাডার ওন্টারিও প্রভিন্সে সর্ব প্রথম নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে

আরিফ আহমেদ, কানাডা

অন্টারিওর ডারহাম অঞ্চলে কানাডায়  সর্ব প্রথম এক দম্পতি নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। যদিও  এই দম্পতি কানাডার বাইরে  কোথাও যাতায়াত করেননি । হেলথ অফিসিয়ালরা এখন এই ভাইরাস নিয়ে ভীষণ ভাবে  চিন্তিত।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এটি প্রথম ইংল্যান্ডের কেন্ট কাউন্টিতে ২১ শে সেপ্টেম্বর ধরা পড়েছিল এবং পরে নভেম্বর মাসের  দিকে তা সমগ্র বিশ্বে  বিস্তার লাভ  করে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন SARS- CoV-2 নামের  যে নতুন ধরণের  করোনা ভাইরাস  তা ইতিমধ্যে কানাডায় এসেছে।

এই নতুন ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার অনেক পূর্বে কানাডার জনস্বাস্থ্য সংস্থা (পিএইচএসি) এর জরুরি অবস্থা প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রের প্রাক্তন মহাপরিচালক রোনাল্ড সেন্ট জন বলেন,  “এই নতুন ভাইরাসটি ইতি মধ্যে কানাডায় না  আসলে আমি অবাক হয়ে যাবো” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উৎপত্তি  এই  নতুন ভাইরাসটি   এখন  ফ্রান্স, জাপান, ইস্রায়েল এবং সুইডেন সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিতে পাওয়া গেছে। “তা খুব সম্ভবত এখন কানাডার মাটি স্পর্শ করছে” একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন।

অনেক সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা  মনে করেন যে সেপ্টেম্বরে যখন প্রথম এই ভাইরাস ইংল্যান্ডে সনাক্ত হয় ঠিক তখনই  লন্ডনের  সাথে পৃথিবীর সকল দেশের সাথে  যোগাযোগ বন্ধ করা উচিত ছিল। এটা এখন খুব দেরি হয়ে গেছে।

image.png

এই নতুন ভাইরাস রুধ করার জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত ২০শে ডিসেম্বর  লন্ডন থেকে আগত সকল  ফ্লাইটগুলি ৭২ ঘন্টার জন্য  বাতিল করেন  এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে তা আগামী জানুয়ারি ০৬ পর্যন্ত তা বর্ধিত করা হয় ।

বিভিন্ন দেশের মতো কানাডায় করোনা -১৯ মহামারীর  সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলছে এবং এই নিয়ে কানাডার বিভিন্ন প্রদেশ এখন লক ডাউন। অন্টারিও প্রদেশ ডিসেম্বর ২৬ তারিখ থেকে আগামী  ২৩শে জানুয়ারী পর্যন্ত লক ডাউন। কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় ব্যবসাকে উন্মুক্ত থাকতে দেওয়া হবে। গত মার্চ মাসে যখন প্রথম করোনা ভাইরাস শুরু হয় তখন প্রথম বারের মতো অন্টারিও লক ডাউন দেয়া  হয়

বৃহস্পতিবার একটি টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, “মোদের্না  এর কোভেদ  -১৯ এর প্রথম ডোজ কানাডায় পৌঁছেছে। এই মাসের শেষে  আমরা আরও  ১৬৮০০০ ডোজ পাব এবং মোদের্না থেকে আমরা সামগ্রিকভাবে ৪০০০০মিলিয়ন ডোজ এর গ্যারান্টি করেছি।”

যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে কানাডা মডার্নার টিকা পেল। ১৮ ডিসেম্বর মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এফডিএ) এ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

এগুলি শুকনো বরফ এবং তাপমাত্রা-পর্যবেক্ষণকারী ডিভাইসগুলি ব্যবহার করে পরিবহন করা হয় যাতে ডোজগুলি শীতল -২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে থাকে – ভ্যাকসিনগুলির  স্থিতিশীল রাখতে এই তাপমাত্রার প্রয়োজনীয়। এদিকে ফাইজার ডোজগুলি শীতল -৮০ তো -৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হয়।

সামাজিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি, সরকার কর্তৃক বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেয়া সত্ত্বেও  বিশ্ববেপী এই মরণ ব্যাধি করোনাভাইরাসকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রিত করা যাচ্ছে না। বিশ্বের সবাই এখন  এক আশঙ্কার মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছেন।

অন্যদিকে কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ অন্টারিও, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা এবং কুইবেকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল, এবং পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ পড়ছে।

স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার হিসাব মতে এইপর্যন্ত কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৪১ হাজার ৬১৬ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪ হাজার ৮০০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৪৮ হাজার জন।

এই নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস কানাডায় আসার কারণে এবং মানুষের মনে আরো ভয়ের সঞ্চার হয়েছে। যদিও এই ভাইরাস সম্পর্কে কেউই এই পর্যন্ত সঠিক তথ্য দেননি। তার কারণ এই নতুন ভাইরাসের জন্ম মাত্র দুই মাস পূর্বে ।

Arif Ahmed

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ