কঠোর নিষেধাজ্ঞার সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় প্রবেশের চেষ্টা

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে কানাডা সরকার বিদেশিদের কানাডা ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কারণ কানাডায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে।

 

তার পর থেকেই কানাডা ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর হয়।

গত ১৬ মার্চ প্রথম বিদেশি নাগরিকদের কানাডা ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরবর্তী সময় নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়ানো হয়। এমনকি কানাডার অভ্যন্তরীণ রুটেও ব্যাপক সতর্কতা গ্রহণ করা হয়।

তবে সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার পর থেকে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল।

২২ মার্চ থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির দেয়া তথ্যমতে ১৮ হাজার ৩৩১ জনকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

অধিকাংশের উদ্দেশ্য ছিল কানাডায় দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ ও কেনাকাটা। তারা নৌপথ, স্থলপথ ও আকাশপথে কানাডায় প্রবেশে চেষ্টা করেছিলেন।

বৈশ্বিক মহামারীর করোনাকালে কানাডায় অফিস-আদালত সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে চললেও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দিন দিন বেড়েই চলেছে।

অন্যদিকে কানাডায় গত সপ্তাহে কয়েকটি প্রদেশের স্কুল খুলেছে এবং ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রদেশের কয়েকটি স্কুলে কোভিড- ১৯ পজিটিভের খবর পাওয়া গেছে।

অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন। যদিও কর্তৃপক্ষ স্কুলে প্রবেশসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

অন্যদিকে কানাডার সরকার দেশটির নাগরিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যাপক সহযোগিতা দেয়ার পরও অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা।

নিজেদের স্বাস্থ্য ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে অনেকেই রেস্টুরেন্টে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রেস্টুরেন্ট বন্ধ রয়েছে, অনেক রেস্টুরেন্ট বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে। এত কিছুর পরও কানাডা সরকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিভিন্ন প্রণোদনামূলক ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ পর্যটন ব্যবসাতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

কানাডায় সাধারণত গ্রীষ্মকালে প্রচুরসংখ্যক পর্যটক ভিড় জমায়। কিন্তু এ বছর বর্ডার বন্ধ থাকায় অনেকেই কানাডায় প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে পর্যটক ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান দীপু বললেন- করোনা মহামারীর প্রারম্ভেই ডা. থেরেসা ট্যাম ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার সরকার যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে ছিল দৃঢ় ও দ্বিধাহীন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রসহ সবল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ তড়িৎ গতিতে বন্ধ করে দেয়।

এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও ম্যাক্সিকোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগকে পরিপূর্ণ সিলগালা করে দেয়।                       রাজীব আহসান

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ