তিন নেতার মৃত্যুতে আ.লীগে উদ্বেগ, মন্ত্রী-এমপিদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ

ভোরের আলো ডেষ্ক: করোনাভাইরাসজনিত প্রতিকূল সময়ে শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এ পরিস্থিতিতে সংগঠনের উচ্চ পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরুর আগেও তাঁদের এক দফা সতর্ক করা হয়। ওই সময় ৩৩ মন্ত্রী-এমপির তালিকা করে তাঁদের সংসদে না যেতে বলা হয়। পরামর্শ উপেক্ষা করে দুজন এমপি সংসদে এলে তাঁদের ভর্ত্সনা করেন চিফ হুইপ। আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য জানিয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান  বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপি ও দলীয় নেতারা কাজ করছেন বলেই অনেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। কারণ সব সময় ঘরে বসে থাকা যাচ্ছে না। জনগণের সঙ্গে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যে দলের উচ্চ পর্যায় থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে বলা হচ্ছে। সংসদে আমাদের অনেককেই যেতে বারণ করা হয়েছে। গত রবিবার দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের জানাজায়ও যেতে নিষেধ করা হয়।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আমরা মানুষের পাশে থেকে কাজ করছি। এ পরিস্থিতিতে মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশজুড়ে মাঠে আছেন। তার পরও দলের নেতাকর্মীদের নিজেদের রক্ষা করে কাজ করতে বলা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রায় ৩৫ জন সংসদ সদস্যকে সংসদের চলতি বাজেট অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।’

গত শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। প্রথমে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। পরে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ওই দিন রাতেই দলের সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মারা যান।

পরের দিন রবিবার গভীর রাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান। এর আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের মৃত্যু হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো মারা গেছেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী, সাবেক এমপি কামরুন্নাহার পুতুল।

বর্তমানে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ অবস্থায় ধানমন্ডিতে ছেলের বাসায় রয়েছেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের দেখা-সাক্ষাৎ অনেক আগে থেকে বন্ধ রয়েছে। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকে। বর্তমানে তিনি উত্তরার বাসায় রয়েছেন। কিন্তু কারো সঙ্গে দেখা করছেন না। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ও ব্যক্তিগতভাবে আইসোলেশনে রয়েছেন সরকারদলীয় যশোরের এমপি রনজিত কুমার রায়, জামালপুরের এমপি ফরিদুল হক খান, চট্টগ্রামের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও মোছলেম উদ্দীন আহমেদ; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এমপি মোহাম্মদ এবাদুল করিম ও বাগেরহাটের এমপি শেখ তন্ময়।

এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত  হয়েছেন রাজবাড়ীর এমপি কাজী কেরামত আলীর স্ত্রী। নওগাঁর এমপি শহীদুজ্জামান সরকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও বর্তমানে তিনি সুস্থ।

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ