নিম্নমানের কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানিতে আওয়ামী লীগ নেতা, মামলা

ভোরের আলো ডেষ্ক: ভুয়া মাস্ক তৈরি করে, নিজেরাই বিভিন্ন জাল কাগজ তৈরি করেছিল কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানি করতে গিয়ে এরকম লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। তিনি দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। ভুয়া মাস্ক আমদানি করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলার অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় দায়েরকৃত মামলা তদন্ত করছে পুলিশ। মামলাটি দায়ের করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১৮ই এপ্রিল ৫০ হাজার কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের জন্য মেসার্স এলান কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী আমিনুল ইসলামকে কার্যাদেশ প্রদান করে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার। ১৩ই মে মাস্কের সিই মার্কিং সনদ, ফ্রি সেল সার্টিফিকেট ও মাস্কের টেস্ট রিপোর্টসহ মাস্ক খালাসের জন্য আবেদন করেন আমিনুল ইসলাম।

কিন্তু পরবর্তীতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানতে পারে, অনাপত্তি নেওয়ার জন্য এলান কর্পোরেশন যেসব কাগজপত্র দেখিয়েছিলো তা ভুয়া। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার যাচাই-বাছাই করে দেখতে পায়  ফ্রি সেল সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই তৈরি করেছে। এটা ইস্যু করার কথা ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার কর্তৃপক্ষ আইএসও সার্টিফিকেট ইস্যুকারী জার্মান প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পায়, এলান কর্পোরেশনের দেওয়া সার্টিফিকেটটি চীনের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা। অথচ এলান কর্পোরেশনের দাখিল করা কাগজপত্রে লেখা ছিল চীনের জিয়ামেন টেকনোলজি নামের ভিন্ন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। এমনকি এলান কর্পোরেশন কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানির মাস্কটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে সনদ জাল করেছে। অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া মাস্ক সরবরাহ করছিলেন আমিনুল ইসলাম। এরপরই গত ২৭শে মে মাস্ক আমদানির জন্য অনাপত্তিসূচক সনদপত্রটি বাতিল করে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এলান কর্পোরেশন জাল ও বানোয়াট কাগজপত্রাদি দাখিলের মাধ্যমে করোনাভাইরাস জনিত (কোভিড-১৯) রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের ব্যবহারের জন্য কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে জনজীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম বাদি হয়ে এলান কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী, আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আমিনের বিরুদ্ধে গত ২৯শে মে বনানী থানায় মামলা করেন। এতে ৬০/এ পুরানা পল্টনের মেসার্স এলান কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আমিনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতার বাড়ি স্থায়ী চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বারদোনার গোলাম মহিউদ্দিন পাড়ায়। এ বিষয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আযম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত চলছে। সেইসঙ্গে আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত আছে।

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ