কানাডা গণমাধ্যমে বাংলাদেশি জামাল আলীর শোকগাথা

লিখেছেন উজ্জ্বল দাশ

সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানো বাংলাদেশি কানাডীয় জামাল আলীকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিপি ২৪ সহ দেশটির মূলধারার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে।

‘দ্য কিডস বিলিভড ইন হিম’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, জামাল আলী ছিলেন একজন জনপ্রিয় বাস্কেটবল কোচ। দ্য স্কারবরো ব্লুজ অনূর্ধ্ব-১২ দলের প্রধান কোচ জামাল শিশু-কিশোরদের কাছে ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। বাচ্চারা তাঁকে খুব পছন্দ করত।

জামাল আলীর পরিচালনায় বাস্কেটবল প্রোগ্রামটির দরুন উপকৃত হয়েছে শত কানাডীয় শিশু-কিশোর। যাদের জীবনে দাগ কেটে আছে তার কাছ থেকে পাওয়া নজরকাড়া প্রশিক্ষণ।

কোচ হিসেবে জামাল খেলোয়াড়দের শুধু খেলোয়াড়ি দক্ষতা তৈরিতে আটকে রাখেন নি, তাদের মানস চরিত্র গঠনেও জোর দিয়েছেন সব সময়।

জামাল আলীর দীর্ঘদিনের বন্ধু মরলান ওয়াশিংটন। তিনি বলেছেন, বাচ্চারা তাকে বিশ্বাস করেছিল, নির্ভরতার একটা জায়গা পেয়েছিল। তার কথাগুলোকে বরাবরই নিষ্ঠার সঙ্গে আমলে নিত দলের খেলোয়াড়েরা।

ওয়াশিংটন আরও বলেন, আলী তার দল স্কারবরো ব্লুজের খেলোয়াড়দের নিয়ে বাস্কেটবল প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন স্বতন্ত্র লক্ষ্য নিয়ে, যা কিনা শুধু প্রতিযোগিতামূলক খেলায় আটকে থাকেনি। খেলোয়াড়দের পেছনে অনেক সময় দিতেন। প্রায়শই খেলোয়াড়দের কারও কারও জন্য জুতো কিনে আনতেন, বরাবর যাদের কেনার সামর্থ্য সব সময় হতো না তাদের প্রতি তার লক্ষ্য থাকত। কারও অনুশীলনে আসা যাওয়ার সমস্যা, জামাল দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে এসেছেন।

জামাল আলীর আরেক বন্ধু ইমানুয়েল বনি বলেন, সেই রাতে আমি তাকে মেসেজ করেছিলাম, সে কেমন আছে জানার জন্য। আমি ফিরতি ফোন পেয়ে জানতে পারি, সে চলে গেছে! জামাল আলী এক মানবিক বোধসম্পন্ন ব্যাতিক্রমী মানুষ। তার ব্যক্তিত্বের রোশনাই আমরা বন্ধুরাসহ পেয়েছে বাস্কেটবল দলের খেলোয়াড়দের পরিবার।


নানা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন জামাল, কাজ করেছেন সুবিধাবঞ্চিত কিশোরদের জন্য। কানাডিয়ান গণমাধ্যমে জামাল আলীর অপ্রকাশিত, ব্যতিক্রমী কর্মের খবর জেনে গর্বের সঙ্গে সঙ্গে শোকগ্রস্ত হয়েছেন দেশটিতে থাকা বাংলাদেশিরা।

গত শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাংলাদেশি আইটি প্রকৌশলী জামাল আলী (৪৫)। তিনি কানাডায় করোনায় প্রাণ হারানো তৃতীয় বাংলাদেশি। তাঁর বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। ষাটের দশকে তাঁদের পরিবার কানাডায় অভিবাসী হয়ে এসেছিলেন। তাঁর দুই সন্তান ও স্ত্রী রয়েছেন।

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ